পিয়ালী বসু ঘোষ
নারী শব্দটি নিয়ে আলাদাভাবে ভাবতে বসিনি কখনো। যেমন পুরুষ শব্দটিও ভাবায়নি বিশেষ। সব সময় মনে হয়েছে শব্দগুলো আইডেন্টিকাল। এই শব্দগুলোর বদলে অন্য অর্থপূর্ণ যে কোন শব্দই প্রযোজ্য হতে পারতো। যেমন second gender শব্দেও আপত্তি আছে আমার।
নারী শব্দটি নিয়ে আলাদাভাবে ভাবতে বসিনি কখনো। যেমন পুরুষ শব্দটিও ভাবায়নি বিশেষ। সব সময় মনে হয়েছে শব্দগুলো আইডেন্টিকাল। এই শব্দগুলোর বদলে অন্য অর্থপূর্ণ যে কোন শব্দই প্রযোজ্য হতে পারতো। যেমন second gender শব্দেও আপত্তি আছে আমার।
মাছ কাটার ভিডিও বা রিলস দেখতে ভালো লাগে, এর অর্থ এটা নয় যে আমিও কসাই। রক্তের দাগ আমাকে কবিতা লিখতে সাহায্য করে এটা চরম সত্য অথচ বিশ্বাস করুন লাল আমার ফেভারিট নয় কোনদিন। পর্নোগ্রাফি নিয়ে লিখতে বললে আমি শুধু স্টারকে নয় ফোটোশ্যুটারকেও বেশ্যা বলব এতে আমার কোনো লজ্জা নেই। কারণ? কারণ লেখাই আমার কাজ আর আমি আমার পার্টনারের জন্য বরাবরই লয়াল।
এই ২০২৪–এর গোড়ায় দাঁড়িয়েও ভারতবর্ষের বুকে সবচাইতে গোপনীয় বিষয় হোলো যৌনতা! আর তা যদি হয় নারীদের যৌন আকাঙ্খা বিষয়ক তাহলে তো সেটা রীতিমত নিষিদ্ধ! কথাটা শুনতে অবাক লাগলেও এটা একশ ভাগ সত্যি। আমাদের সমাজে একটি মেয়ে যখন ঋতুমতী হয়, অর্থাৎ তার মাসিক রক্তক্ষরণ শুরু হয় তখন থেকে সমাজের চোখে সে একজন নারী এবং এটা তাকে দায়িত্ব নিয়ে প্রতিপলে মনেও করিয়ে দেওয়া হয়।
রবীন্দ্রনাথ ছোটগল্পকে যেভাবে বয়ান করেছেন বা নরেন্দ্রনাথ মিত্র, জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীরা ছোট গল্পের জগতে যে উদাহরণ রেখে গেছেন বা এডগার অ্যালান পো, মোঁপাসা ইত্যাদি বিদ্বজনেরা যেভাবে ছোটগল্পের যুগান্তকারী বর্ণনা দিয়েছেন তারপরেও ছোটগল্প
সৌম্যশংকর আজও ভোরবেলা উঠে গায়ে একটা হালকা সুতির চাদর চাপিয়ে দোতলার দক্ষিণ কোণের জানালাটা খুলে দিলেন। আকাশে হালকা মেঘ। এখন ব্রাহ্ম মুহূর্ত। আরো একটু পর ভোর হবে। ভোরে ওঠা তাঁর নিত্যদিনের অভ্যেস হলেও এত ভোরে ওঠেন না। আজ যে মহালয়া। পিতৃপক্ষের শেষ, মাতৃপক্ষের শুরু। বড় পবিত্র দিন। বাইরে শিউলি গাছ থেকে গন্ধ আসছে।
বুদ্ধি হয়ে থেকে পেনি দেখছে ওর ঠাকমা ছাড়া আর কেউ নেই। ও ছোটো থাকতেই ওর বাবা বাইরে কাজে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। তারপর ওর মা ও ওকে ফেলে কার সাথে যেন চলে গেছে। রাস্তার ধারে ফুটপাতের ওপরে ছেঁড়া পলিথিনের নিচে ঠাকমার ঘর সংসার। ঠাকমা সকাল হলেই রাস্তার পাশে এক কোণে একটা ভাঙা থালা নিয়ে ভিক্ষা করতে বসে।
আমরা ছোটবেলায় শুনেছিলাম, পড়াশোনা এবং সততা বেশ দরকারি জিনিস। কৈশোরে জানলাম আদব কায়দা আর ইংরাজি বলাটাই আসল। উঠতি বয়সে শিখেছিলাম, সের’ম সুপারিশের জোর থাকলে সমাজে কলকে পাওয়া যায় সহজে। মধ্য তিরিশে এসে বুঝে গেছি, কোনও লজিক জীবনে শেষপর্যন্ত খাটে না। অদৃশ্য এক মন্ত্রবলে জীবনের মইতে কেউ চড়চড় করে উঠে যায়, আর কেউ পড়ে সাপের মুখে। অধিকাংশ লোককে কালসাপ গিলে খায়। সামান্য দু’চারজন ওঠে মগডালে। কিন্তু সে সম্বন্ধে লোকের আগেকার সব ধারণা বেমালুম ভুল।
অফিস থেকে ফেরার পথে আগের স্টপেজেই বাস থেকে নেমে পড়ে বৈশাখী। এখানে একটা হকার্স কর্ণারে মোটামুটি ভালো পছন্দসই জিনিসপত্র একটু সস্তায় পাওয়া যায়। সেখান থেকে টুকিটাকি দুএকটি জিনিস কিনে নেবে। সেইজন্য অফিসে বলে একটু আগে বেরিয়েছে সে। সাতটার মধ্যে বাড়ি ফিরতে হবে তাকে। ছেলে পাপানকে যে দেখাশোনা করে সাতটা পর্যন্ত তার ডিউটি।
রাত দুটো নাগাদ মন্মথর ডোরবেল এক নাগাড়ে বেজে চলেছে। জোনাকি মন্মথকে ধমক দিয়ে বলে, যাও। দরজাটা খুলে দেখো কে কী দরকারে এসেছে। নিশ্চয় কোন বিপদে পড়েছে। নাহলে এত রাতে কেউ কারো বাড়ির বেল বাজায়। মন্মথ উঠে সোজা টয়লেটে চলে যায়। তার ফিরে আসার নামগন্ধ নেই। ওদিকে বেল বন্ধ হওয়ার কোন লক্ষণ নেই।
শালগাছের নিচে দাঁড়িয়ে উত্তরদিকে মুখ করে অন্যমনস্ক দেবল নাক খুঁটছিল খুব মন দিয়ে। কিছু পুরুষ মানুষ থাকে যারা অন্যমনস্ক হলেই নাক খোঁটে এবং খুব মন দিয়ে খোঁটে, দেবল সেইরকম। মনে হয় যেন অনেক ধনরত্ন গুহার অভ্যন্তর থেকে বেরিয়ে আসবে, তাই খননকার্য চলতে থাকে। উত্তরদিকের পুকুরে টলটলে জলে মৃদুমন্দ হাওয়ায় জলে ছোট ছোট ঢেউ এসে পাড়ে লাগছে। দেবল নাক থেকে কিছু বের করে হাতে নিয়ে দু-আঙুলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গোলা তৈরি করল মিনিট খানেক ধরে, তারপর আঙুলের ডগায় সেটি নিয়ে টিপ করে ছুড়ে দিল পদার্থটি।