চিরঞ্জীত সাহা

বেঁচে থাকতে ফাদার্স ডেতে তোমাকে উইশ করা হয়ে ওঠেনি কোনোদিন। সাহেবসুলভ উদযাপনের আতিশয্যে তোমার ভীষণ অ্যালার্জি দেখে এসেছি ছোট থেকেই …তোমার জন্মদিনটা ঠিক কবে, বলতে পারেনি কেউ। জানলেও যে কেক কিনে এনে সেলিব্রেশনের আয়োজন করতাম --- তেমনটা একদমই নয়। কারখানা থেকে ফেরার পর গামছা দিয়ে ভেজা শরীরটা মুছিয়ে দিতে পারলেও ওসব বিলিতি আতিশয্যের সাহস জড়ো করে উঠতে পারিনি কিছুতেই।

2 Comments

পর্ণা চক্রবর্তী

ভেবেছিলাম কথাগুলো তোমাকে সামনেই বলবো কিন্তু সুযোগ  মেলার আগেই, হঠাৎ করে কোন সাত সমুদ্দুর তেরো নদীপার পার,সুদূর দেশ থেকে  ডাক এলো তোমার যাওয়ার।  তুমি চলে গেলে। বলে গেলে ফিরে এসে শুনবে। তোমার কাজের তাড়া ছিল।  তুমি কত ব্যস্ত, কত কাজ তোমার ,আমার কথা  শোনার  তোমার সময় কই। আমারও কাজ আছে তবে  সেসব বড়োই আটপৌরে।  তোমার কাজের তাড়া,আর আমার এখন যাওয়ার তাড়া। এবারে চলে যেতে হবে,  বেশী সময় নেই আর। তাই আমার সব প্রাণের কথা ,  লিখে রেখে  গেলাম তোমার জন্য। জানো কবি খুব ইচ্ছে ছিল মুখোমুখি দুজনে বসে গল্প করি।

0 Comments

কৌশিক চক্রবর্ত্তী 

কেউ কখনো চিৎকার করে কিছু বলতো মাছরাঙা দ্বীপের পাড় ঘেঁষে। রোজ বলতো, কাছে যেতে বলতো, কিছু রেখেও যেতে বলতো। তুমি তো জানোই আমি মিথ্যে বলি না। অতএব চোখের আশপাশ লালবর্ণ হলেই আমি বেপরোয়া হয়ে উঠতে জানি। ঝাঁপিয়েও পড়তে জানি জ্যোৎস্নায়, আশ্বাসের সমুদ্রে। দ্বীপ খুব নিরাপদ জায়গা জানো তো? সেখানে বিড়ালে রাস্তা কাটার ভয় থাকে না, ক্রমান্বয়ে বন্যাকবলিত হলেও সর্বস্বান্ত সাজাবার রক্তচক্ষু থাকে না। সেখানে যেটুকু উষ্ণতা থাকে, তাও শীতের প্রতিমাভেদে নতজানু। আজ নিরন্তর বুকে খেজুর গাছের হাঁড়ি বেঁধে জলে ভেসে চলার টান -----

0 Comments

মৌসুমী চৌধুরী 

বুজে আসা দীঘির মতো শুয়ে থাকা স্তব্ধ এ সময়ে বুড়ির সুতো হয়ে উড়ে আসছে স্মৃতি! আমার হাজার স্কয়্যার ফিটের তেল-হলুদ সংসারে আজ আছড়ে পড়ছে কুসুমগন্ধি বেদনা যত। স্মৃতির সরণি বেয়ে মনটা আজ যেন এক্কাদোক্কা খেলতে খেলতে হেঁটে চলেছে পিছনের দিকে। চোখের পাতায় যেন ঘনিয়ে আসছে কিশোর যীশুর মতো তোমার মুখ! নিঝুম দুপুরখানা আজ পাঁজর খুঁড়ে অতীতের আলোয় ভেজাচ্ছে চৌকাঠ।

0 Comments

 নন্দিতা আচার্য

অনেক দিন বাদে তোমাকে চিঠি লিখতে বসেছি। আসলে আমার মনটা কেমন খারাপ হয়ে আছে। এখন তো বৃষ্টির সময়; বর্ষা আমার প্রিয় ঋতু। বারান্দায় বসে আমি একমনে বৃষ্টি পড়া দেখি। খুব ইচ্ছে হয় বাড়ির  সামনে বেশ জল জমবে, তাতে আমি নৌকো  ভাসাবো। আর আজ সেই ভাবনাটার জন্যই দুঃখ হচ্ছে। নদীর ধারে জেলেপাড়ায় জল জমে গেছে গো!    

0 Comments

এলা বসু 

বড়ো পিপাসা! গলা শুকিয়ে আসছে। তোমাকে ডাকব বলে নীল কালি, তোমাকে লিখব বলে সাদা থান কাপড়ের মত কাগজ খুলে বসে আছি মা! যদিও এ এক অনন্ত চিঠি, তবু শুরুটা হোক নির্দিষ্ট কোনো সময়ে... ধরো যখন প্রথম স্কুলে গিয়ে কাঁদতে শুরু করলাম আর পেট ব্যথার অজুহাতে স্কুল কামাই করা অভ্যেস করে ফেলছিলাম, তুমি পরম যত্নে প্রাইমারি সেকশনের ছোট জ্যোৎস্নাদিকে বলেছিলে আমাকে দেখে রাখতে আর আমি কাঁদলেই তিনি কোলে করে ঘোরাতেন।

0 Comments

হেমন্ত দাস

জানো "ম" ! আমি জানি এই চিঠি পৌঁছাবেনা কোনদিন তোমার কাছে , ঠিকানাটাই ভুল ছিল আমাদের । ভাবাবেগগুলো কলসির ভেতর পুরে যদি অস্থি বিসর্জনের মতো ভাসিয়ে দেওয়া যেত ! তাহলে হাত পা ছুঁড়ে আর চেঁচামেচি করতো না । আমার একলা মনের ভাবাবেগ , বাজপড়া বাবলা গাছে বাঁদুরের মতো ঝুলে থাকবে আজীবন ।

0 Comments

শরণ্যা মুখোপাধ্যায়

আচ্ছা, আমার কি আপনাকে অমুকবাবু বলা উচিত ছিল? কিন্তু সে যে আমি বলতে পারিনি শুরুতেই। সামাজিক হিসেবগুলো আজও বুঝে উঠতে পারিনি, জানেন তো আপনি।

0 Comments

মানসী মন্ডল

আজ এই শেষ শ্রাবণে আমার শহরে আর তোর গ্রামে আকাশ ঘিরে মেঘ করে এসেছে।অনেক অনেক দিন পর সুদূর  বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ। এই নিম্নচাপের জন্য সবার হাপিত্যেশ অপেক্ষা ছিল। ঠিক সময়ে ঠিক বৃষ্টির অভাবে কত জমি আবাদ হল না।অবশেষে অসময়ে বৃষ্টি এল। কালো মেঘ উড়ে যাচ্ছে আকাশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে।

0 Comments

মোনালিসা চন্দ্র 

কে জানত বল, চিঠি লেখা কাজটা এত তাড়াতাড়ি এমন ‘রেট্রো থিং’ হয়ে যাবে? জগতে ‘মোবাইল’ নামের এক কেজো বস্তুর উদয় হবে আর সে এসেই চিঠি লেখার পাটকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ লেবেল সেঁটে বাজে কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দেবে একথা কি আমরা দুঃস্বপ্নেও ভেবেছিলাম?

0 Comments