মৌসুমী চৌধুরী

আজকাল বাড়িতে ঢুকলেই মেজাজটা  খিঁচড়ে যায় বুলুর। কানের কাছে বাবার গঞ্জনা আর খকর-খক কাশি যেন তালে তালে কাঁসর-বাদ্যি বাজাতে থাকে। পলেস্তারা খসা বারান্দায় বসে দিন-রাত কাশতে কাশতে বাবা বুলুকে গালাগালি করতে থাকেন। আজও তার ব্যতিক্রম ঘটল না...

0 Comments

পার্থ রায়

এই গল্পের প্রধান চরিত্র দেবেশ। দেবেশ সরকার। কোন ভিআইপি, সেলিব্রিটি, হাই প্রোফাইলের কেউ নয়। সাধারণ মধ্যবিত্ত গৃহী মানুষ। অবসরপ্রাপ্ত গণিত শিক্ষক। এলাকায় সুপরিচিত এবং সর্বজনশ্রদ্ধেয়।  এবার দেবেশবাবুর অন্যদিক নিয়ে আলোকপাত করা যাক।

0 Comments

পিনাকী  চক্রবর্তী

আরেকবার মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে বুক কেঁপে উঠল। হাতের শিরাগুলো  এমন ভাবে  উপড়েছে— যেনও  মাটি  থেকে  নির্দ্বিধায়  দূর্বা ছিঁড়ে  নিয়েছে  কেউ! এই মৃত্যু  ভয়ানক  বেদনাদায়ক। কাঁধটা  একদিকে  হেলিয়ে, নিথর দেহটা  কলেজের  ছাদেই পড়েছিল। মেয়েটির  সম্বল বলতে  বিধবা মা।  বয়স ষাট।

1 Comment

পারমিতা মণ্ডল 

গরম লাভা আগ্নেয়গিরির মুখ থেকে বেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে গুপ্ত গহ্বরে। চন্দ্রিমা অনুভব করছে সে উষ্ণতা। একটা চাপা কষ্ট কোথাও। সে কষ্টের উৎস কোথায় খুঁজছে সে। সবকিছুই কত যান্ত্রিকভাবে ঘটে গেল। শুধু আজ নয়, ওম যখনই চন্দ্রিমার শরীরের অলি গলি দিয়ে যায় তখনই কেমন যেন ছুটন্ত চিতাবাঘ হয়ে যায়। এত দ্রুত! চন্দ্রিমার ভালো লাগে না এই গতিবেগ।

0 Comments

রিনা রায়

বস্তিটা রাতারাতি পুড়ে ছাই হয়ে গেলো। সাতাশটি পরিবারের ষাট জন মানুষের আশ্রয়স্থল এক রাতেই শ্মশানে পরিণত হল। পুলিশের রিপোর্টে জানা গেলো নারী, পুরুষ শিশু মিলিয়ে চোদ্দো জন ঘুমন্ত অবস্হায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে, উনত্রিশজন আশংকাজনক অবস্হায় হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। যারা কোনোক্রমে বেরোতে পেরেছিলো ছোটোখাটো আঘাত ছাড়া তারা প্রাণে বেঁচে গেছে আর সেদিন যারা বস্তির বাইরে ছিলো তারা প্রাণে বেঁচেছে।

0 Comments

রাজদীপ ভট্টাচার্য

ছোটোবেলায় মামারবাড়ি যাওয়ার প্রধান আকর্ষণই ছিল ওই রহস্যময় বাগান। যদিও ভালোলাগার বিষয় সেখানে এতটুকুও কম ছিল না। অতবড় দালানওলা বাড়ি। পুরোনো আমলের আর্চ করা প্রায়ান্ধকার সিঁড়ি। দুপুরবেলার নির্জন পেটানো টালির ছাদ। রাতে বিছানায় শুয়ে কড়ি বরগা গোনা। চুপিচুপি পুকুরপাড়ে গিয়ে মাছ, গোঁয়াড়গেল, শ্যাওলাধরা কচ্ছপ দেখা। তক্ষকের ডাক শোনা।

0 Comments

রাজর্ষি বর্ধন

বসন্ত বাতাসে, অবশ্য সেটা  থাকলে তো?  “বাতাস” নামক সূক্ষ্ম, মোলায়ম, ভারহীন বস্তুটির অস্তিত্ব মাঝে-মাঝে অনিশ্চিত মনে হয় এই ৩০২২ সালে দাঁড়িয়ে। হাজার-হাজার বছর আগে বিজ্ঞানীদের করে যাওয়া বাতাসের চরিত্রের সঙ্গে বর্তমানের কোন মিল নেই। এখন পৃথিবীর সব চাইতে জটিল জিনিস বুঝি “বাতাস” ব্যপারটা ব্যাখা করা!  বাতাস, বা বায়ুমণ্ডল  আছে বটে, তবে সেটা একরকম না থাকারই সমান।

0 Comments

রবীন বসু

'এখানে সই করো, তোমার জামিন হয়েছে।' একটা লম্বা বাঁধানো খাতা বের করে তার নামের পাশে পেন ঠেকিয়ে বলল জেলার। বিমল নাম সই করে জেলারের দিকে তাকায়। সে বেশ অবাক হয়। 'আমার জামিন হয়েছে!'

0 Comments

রঞ্জনা ভট্টাচার্য 

আমার নাম ছায়া। শ্মশান থেকে উঠে আসা ভূতের ছায়া নয়। আমি জন্মেছি ছায়া হয়ে। ভেসে ভেসে যাই, যখন ইচ্ছা যার দেওয়ালে ইচ্ছে ঠেস মেরে নিই। আমি সবাইকে দেখতে পাই। কিন্তু, সবাই আমাকে দেখতে পায় না। তোমাদের মতো মরণ-বাঁচন নিয়ে আমি চাপ খেয়ে থাকি না। আমি এই আছি আবার এই নেই, যখন নেই তখনও আসলে থাকি, শরীরের গন্ধ, মনের ঈর্ষা-দ্বেষ, প্রেম যা কিছু তোমাদের নিজস্ব বলে ভাব, তা আমাদের অনু-পরমাণুতেও ছড়িয়ে আছে।

0 Comments

শাশ্বত বোস

ঝলসানো আকাশের সিঁদুরে মেঘে, শেষ বিকেলের মায়া জড়ানো, ডুবন্ত সূর্যের আলোটা তখনও বেশ স্থির। স্থূল কোণের দ্রাঘিমাংশ বেয়ে শূন্যগর্ভের দিকে এগিয়ে যাওয়া আমাদের এই বাড়িটার লাগোয়া বাগানে, চাঁপা গাছটায় ফুল ফুটেছে, পোয়াতি ঝরনার মতো। এমন বিকেলেই আগে প্রেম আসতো নিয়মিত, স্বপ্নবিলাসী মনের অনিত্য ডাকঘরে।

0 Comments