সেদিন দুজনে
পারমিতা মণ্ডল
১ গরম লাভা আগ্নেয়গিরির মুখ থেকে বেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে গুপ্ত গহ্বরে। চন্দ্রিমা অনুভব করছে সে উষ্ণতা। একটা চাপা কষ্ট কোথাও। সে কষ্টের উৎস কোথায় খুঁজছে সে। সবকিছুই কত যান্ত্রিকভাবে ঘটে গেল। শুধু আজ নয়, ওম যখনই চন্দ্রিমার শরীরের অলি গলি দিয়ে যায় তখনই কেমন যেন ছুটন্ত চিতাবাঘ হয়ে যায়। এত দ্রুত! চন্দ্রিমার ভালো লাগে না এই গতিবেগ। শান্ত ধীর স্থির চন্দ্রিমার তখন সেই দিনের কথা মনে পড়ে। হ্যাঁ, সেই বৃষ্টি-ভেজা দুপুর। ওম গিয়েছিল অফিসের কাজে দিল্লি। নিঝুম বাড়িতে একা চন্দ্রিমা জানালার ধারে বসে বৃষ্টিস্নাত পরিবেশের রূপ, গন্ধ মন প্রাণ ভরে উপভোগ করছিল। হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজ। দরজা খুলতেই দেখে ঋষি। চন্দ্রিমা একটু চমকে উঠেছিল যেন। ঋষি তো জানে ওম বাড়িতে নেই। তাহলে! অস্ফুট স্বরে চন্দ্রিমা বলে উঠেছিল, ” আপনি, এই সময়!” ” হ্যাঁ, ওম নেই। ভাবলাম আপনার একটু খোঁজ নিয়ে যাই।” ওমের ছোটবেলার বন্ধু ঋষি। অথচ কত পার্থক্য দুজনের চিন্তাধারায়, আচার আচরণে। একদিকে ওম পাহাড়ী নদীর মতো উচ্ছ্বল, চঞ্চল। অন্যদিকে ঋষি…। সোফায় বসে দুজনে গল্প করতে করতে কখন যে সম্পর্কের বাইরের আস্তরণ ভেদ করে ঋষি ঢুকে পড়েছিল চন্দ্রিমার ব্যক্তিগত বৃত্তে বুঝতেই পারা যায়নি। ইয়ার্কি করে ঋষি বলেছিল ” আপনি আপনার নামের মতোই স্নিগ্ধ। আপনাকে গায়ে মেখে উজ্জ্বল হওয়া যায়। কিন্তু আপনাকে কেন যে ওম…!” চন্দ্রিমার গাল গড়িয়ে জল পড়ছিল। এক মুহূর্তে মনে হয়েছিল, কেন বলছে ও ঋষিকে এইসব? কী হয়েছে ওর? এর আগে তো কখনো বলেনি এইসব ব্যক্তিগত কথা কাউকে! তবে ভাল লাগছে চন্দ্রিমার। অনেকটা হালকা। কাছে এসে চোখের জল আস্তে করে মুছিয়ে ঋষি বলেছিল, ” কখনো একবার সুযোগ পেলে চেখে দেখবেন জীবনের স্বাদ।” কোন্ অজানা আকর্ষণে নিজেকে মেলে ধরেছিল চন্দ্রিমা। ড্রয়িং রুমের সোফা যেন তখন কুসুমাস্তীর্ণ প্রান্তর। দুটো শরীর ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছিল কোনো এক পার্থিব জাদুতে। মাথার চুল থেকে পায়ের পাতার প্রতিটা স্নায়ু অনুভব করছিল নারী হবার স্বাদ। এক অপার ভাললাগায় ডুবতে ডুবতে চন্দ্রিমা বলে ওঠে— “এভাবে কেউ আমাকে আবিষ্কার করেনি ঋষি।” ঋষি বুকের মাঝে মুখ ঘষতে ঘষতে বলেছিল, “তোমার সব চাহিদা পূরণ করতে চাই, অন্তত একদিনের জন্য।” ঋষির শরীর যখন চন্দ্রিমার শরীর বেয়ে আরোহণ অবরোহণ করছিল তখন চন্দ্রিমা অবাক মনে ভাবছিল, এই শান্ত স্রোতের অনুভূতি কেন পায়নি সে আগে! অদ্ভুত আবেশে, ভালোলাগায় চোখ বুজে গিয়েছিল। সোফা ছেড়ে ওঠার সময় ঋষি চন্দ্রিমার চোখের পাতায় আলতো চুমু খেয়ে বলেছিল, “নাও, ঠিক হয়ে নাও। এই মুহূর্তগুলোই থাকে জীবনে। ভয় পেয়ো না। বিশ্বাসটুকু রেখো।” ওম এতক্ষণ চুপচাপ পড়েছিল চন্দ্রিমার ওপর। চন্দ্রিমা এক ঝটকায় সরিয়ে দিতে চাইলো ওমকে কিন্তু পারল না। দীর্ঘ চওড়া শরীরটা এখন সাপের মতো ঠান্ডা। নগ্ন দুটো শরীর আলো আঁধারে পড়ে থাকে। শুধু একটা আদুরে দুপুর অনেকটা আলো ছড়িয়ে দেয় চন্দ্রিমার স্মৃতিপটে। ২ সূর্যের তেজ বেশ কিছুটা কমে এসেছে। হালকা শীতের আমেজ মেশানো হাওয়া ছুঁয়ে যাচ্ছে বিকেলের শরীর। একটা ফাঁকা বেঞ্চে গিয়ে বসলো চন্দ্রিমা। পার্কে এখন বেশ ভিড়। দাদু ঠাম্মারা নাতি নাতনিদের নিয়ে আসে। বাচ্চাগুলোর মিষ্টি কোলাহলে পার্ক হয়ে ওঠে সরগরম। বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের হাসিতে ভরে যায় পরিবেশ। এখানে এসে অনেক বেশি জীবন্ত হয়ে ওঠে চন্দ্রিমা। মেয়ের কাছে থাকে এখন জলপাইগুড়িতে। বেশ কয়েক বছর হয়ে গেল চিরশান্তির দেশে চলে গেছে ওম। এত তাড়াতাড়ি যাওয়ার কথা ছিল না। তবুও ব্রেইন ক্যান্সারের ছোবলে বাষট্টিতেই…।আজ কেন এত দেরি করছে কে জানে! বারবার ঘড়ির দিকে চোখ চলে যাচ্ছে চন্দ্রিমার। হাতের ব্যাগটা থেকে মোবাইলটা বের করে আবার রেখে দিল। এই নিয়ে তিনবার। দিন দুয়েক আগে আলাপ হয়েছে শ্রীময়ীর সঙ্গে। শ্রীময়ী সান্যাল। চন্দ্রিমার মতো সেও প্রায় রোজই আসে এখানে। সেদিন ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করতে গিয়ে টাকা পড়ে গিয়েছিল। শ্রীময়ী দেখতে পেয়ে বলেছিল “আরে দিদি আপনার ব্যাগ থেকে টাকা পড়ে গেল।” তড়িঘড়ি টাকাটা তুলে নিয়ে ধন্যবাদ বলতে যাবে, শ্রীময়ী বলে উঠেছিল, “একদম বলবেন না ওই শব্দটা। তার থেকে বরং একটু বসুন। দুটো কথা বলি।” চন্দ্রিমা ও শ্রীময়ী একে অপরের আন্তরিকতায় ভেসে কখন যে দুই বন্ধুতে পরিণত হয়েছিল সে বোধহয় স্বয়ং ঈশ্বরও জানেন না। আজকাল এত দিলখোলা মানুষ কোথায়! আবার একবার ঘড়ির দিকে চোখ রাখে চন্দ্রিমা। নাহ্, আজ আর বোধহয় আসবে না। আবার মোবাইল বের করে শ্রীময়ীর নাম্বারে টাচ করে চন্দ্রিমা। বেশ কিছুক্ষণ রিং হওয়ার পর একটি পুরুষ কণ্ঠ। “হ্যালো” “হ্যালো, এটা শ্রীময়ী সান্যালের নম্বর তো? আমি চন্দ্রিমা। চন্দ্রিমা দত্ত। ওনার সঙ্গে পিস গার্ডেনে পরিচয়। আমরা বন্ধুই বলতে পারেন। আজ ও পার্কে এলো না দেখে ফোন করছি।” ফোনের ওপারের মানুষটা একটু বিস্ময় মাখানো চাপা গলায় বলে ওঠে, “চন্দ্রিমা দত্ত!” “হ্যাঁ, একবার শ্রীময়ীকে দেওয়া যাবে? ও ঠিক আছে তো?” এবার মোবাইলের ওপারের পুরুষ কণ্ঠস্বর থেকে যে কথাটা তীরের মতো এসে চন্দ্রিমার কানে বিঁধল তা সে স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। “ওম কেমন আছে চন্দ্রিমা? আমি ঋষি। মনে আছে আমাকে তোমার?” খানিকটা থতমত খেয়ে চন্দ্রিমা চুপ করে থাকে। ঋষি বলেই চলে। “কথা বলছ না কেন? কথা বল চন্দ্রিমা। তুমি সেই চন্দ্রিমা দত্তই তো যার হাজবেন্ডের নাম ওম? কলকাতায় ছিলে বছর তিরিশ আগে। তারপর ওমের ট্রান্সফার হয়ে যাওয়ায় চলে গিয়েছিলে দিল্লি।” নিজেকে কিছুটা সামলে চন্দ্রিমা বলে “হ্যাঁ আমিই সেই। কিন্তু আপনি হঠাৎ আমাকেই আন্দাজ করলেন কিভাবে?” “আমি শ্রীময়ীর কাছে তোমার বিষয়ে জেনেছি অল্পস্বল্প। তাই সহজেই বলে ফেললাম।” “আচ্ছা। ওম বছর চারেক আগে ব্রেইন ক্যান্সারে মারা গেছে। তা আপনি এখানে?” “সেকি! এত তাড়াতাড়ি! তোমরা সেই যে দিল্লি চলে গেলে আর কোনভাবেই যোগাযোগ করতে পারিনি। কত ফোন করেছি ওমকে। কিন্তু ধরেনি। বেশ কিছু কৌতূহল মনে পুষে রেখেছি আজও।” চন্দ্রিমা এবার কথা ঘোরানোর চেষ্টা করে বলে, “শ্রীময়ী কোথায়?” “শ্রীময়ী আজ বাথরুমে পড়ে গেছে। পায়ে চোট লেগেছে।” “তাই নাকি! ডক্টর কী বলেছেন?” “এক্সরে করাতে হবে এবং কিছু ওষুধপত্র দিয়েছেন।” চন্দ্রিমা আবার কিছু বলতে যাবে ঋষি বলে ওঠে, “আমি তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাই চন্দ্রিমা।” “কী হবে দেখা করে? কিছু কৌতূহল কৌতূহল থাকাই ভাল। সেগুলো নিয়েই বাঁচতে শিখলে জীবনে সমস্যা থাকবে না।” “প্লিজ চন্দ্রিমা। একটিবার দেখা করতে চাই। শুধু একটিবার।” অনেক অনুরোধে চন্দ্রিমা রাজি হয়। “ঠিক আছে, দেখছি।” ৩ আর দু-পা বাড়ালেই কফিশপ যেখানে ঋষি দেখা করবে বলেছে। ঘড়ির কাঁটা চারের ঘরে। মনের মধ্যে অনেক কিছু খেলা করছে চন্দ্রিমার। অনেক প্রশ্ন উত্তর মস্তিষ্কের কোষে ঘোরাফেরা করছে। একটু যেন ভয়ও চেপে বসেছে মনে। চোখে মুখে তার ছাপ। কিন্তু না, এভাবে থাকলে হবে না। কনফিডেন্স আনতে হবে। নিজেকে শক্ত করে চন্দ্রিমা এগিয়ে যায়। কফিশপের এক কোণে নয় নম্বর টেবিল। সদ্য ষাট পেরোনো চন্দ্রিমা লক্ষ করে একজন বসে আছে টেবিলের সামনে পাতা চেয়ারে। পেছনটা দেখা যাচ্ছে। একটু দূর থেকেই যতটা সম্ভব নিরীক্ষণ করে চন্দ্রিমা। মাথার চুলে সাদা রং-এর আধিক্য। শীর্ণকায় শরীরে অযত্নের ছাপ। খুবই সাদামাটা পোশাক পরিহিত। চন্দ্রিমা এগিয়ে যায় টেবিলের দিকে। এতদিন পর চন্দ্রিমাকে দেখে প্রায় ভূত দেখার মতো করে দাঁড়িয়ে পড়ে ঋষি। দুজনেই চুপ। চুপ থাকারও তো একটা ভাষা আছে, যে ভাষায় থাকে অনেক প্রশ্নের উত্তর। অনেক উপলব্ধির ছোঁয়া। নীরবতা ভঙ্গ করল চন্দ্রিমাই।“নমস্কার ঋষি! কেমন আছেন?” “ভালো আছি।” “আজ শ্রীময়ী কেমন? ওর এক্স রে করা হয়েছে? রিপোর্ট?” “সামান্য চিড় ধরেছে। এখন পুরো বেড রেস্ট।” ওয়েটারকে ডেকে দুটো কফি ও এক প্লেট চিকেন পকোড়া অর্ডার দিল ঋষি। তারপর খানিকক্ষণ একভাবে চন্দ্রিমার দিকে তাকিয়ে থেকে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেললো। অস্বস্তি লাগছিল চন্দ্রিমার। যতই হোক সেই দুপুরের কথা কখনো ভুলতে পারেনি চন্দ্রিমা। এবার একটু দৃঢ় কণ্ঠে চন্দ্রিমা বলে, “বলুন, কেন দেখা করতে চেয়েছিলেন?” “আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, ওম আমার এতো ভালো বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও কেন দিল্লি যাওয়ার পরে আর যোগাযোগ করেনি?” “আমি বলেছিলাম না কিছু কৌতূহল কৌতূহল থাকাই ভালো।” ওয়েটার দুটো কফি আর পকোড়া দিয়ে চলে গেল। পকোড়ার প্লেটটা চন্দ্রিমার দিকে এগিয়ে দিতে দিতে ঋষি বলল, “তবুও! ওম কি কিছু আন্দাজ করতে পেরেছিল? তোমরা ভালো ছিলে তো? আমি সেই দুপুরের ঘটনার কথা বলছি। তুমি জানো না আমি কিরকম আত্মযন্ত্রণা ও মনোকষ্টে ভুগেছি। এই প্রশ্নের উত্তর না পেলে আমি যে মরেও শান্তি পাব না।” চন্দ্রিমা কফিতে চুমুক দিয়ে জানতে চায়, “আমরা দিল্লি যাওয়ার পর কবে বিয়ে করলেন? শ্রীময়ী বেশ ভাল একজন মানুষ। অতীতকে ঘাঁটাঘাঁটি করবেন না।” “আমি বিয়ে করিনি। শ্রীময়ী আমার দূর সম্পর্কের বোন। ডিভোর্সি। ওকে দেখে বোঝোনি?” “আজকাল দেখে বোঝা যায় না সবাইকে যে সে বিবাহিতা না অবিবাহিতা নাকি ডিভোর্সি। আমি এই বিষয়ে শেষদিন কথা তুলেছিলাম কিন্তু…! যাই হোক!” “তুমি আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। প্লিজ এড়িয়ে যেও না। প্লিজ!” সময়কে একটু যেতে দেয় চন্দ্রিমা। ঝড়ের আগে যেমন একটা আভাস পাওয়া যায়, সবকিছু থমথম করে, ঠিক তেমন একটা দমবন্ধ করা আবহাওয়া অনুভব করে ঋষি। ৪ অনেক চেষ্টা করেও ওম ও চন্দ্রিমার কোন সন্তান আসেনি। সমস্যা ছিল ওমের। ওম জানতো সেটা। চন্দ্রিমার প্রেগনেন্সির খবর পাওয়া মাত্রই ওম জিজ্ঞেস করেছিল চন্দ্রিমাকে,“কী করে হলো? তার মানে কি আমি সক্ষম? কিন্তু…!” ওমের সন্দেহের দৃষ্টি এড়ায়নি চন্দ্রিমা। যা হয় হবে গোছের মনোভাব নিয়ে বলেছিল “এ সন্তান তোমার নয়।” বিদ্যুতের ঝিলিক খেলে গিয়েছিল ওমের মাথায়। ওম দুহাতে চন্দ্রিমাকে ধরে জোরে ঝাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল “কার? বল কার?” সবকিছু জেনে কেমন স্থবির হয়ে গিয়েছিল ওম। কিন্তু কোথাও যেন নিজের অক্ষমতাকেও দোষারোপ করছিল মনে মনে। চন্দ্রিমাকে নারী হবার পরিপূর্ণ স্বাদ দেওয়ার অক্ষমতা। এক প্রকার জোর করেই সব মেনে নিয়েছিল সে। শর্ত ছিল শুধু একটাই। কখনো ঋষির সাথে যোগাযোগ করা যাবে না। চন্দ্রিমা বুঝতে পেরেছিল ওমের অসহায়তা। তাই কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। ওমের হাত ধরে বলেছিল, “আমাকে ক্ষমা করে দাও।” অদ্ভুত এক দোলাচলে পড়েছিল ওম। একদিকে বাবা হবার সুখ, সে যতই নিজের ঔরসজাত না হোক। অন্যদিকে চন্দ্রিমার আত্মদহন। চন্দ্রিমার চোখের জল মুছিয়ে ওম শুধু বলেছিল, “এ সন্তান আমাদের। অন্য কারোর কোনো অধিকার থাকবে না ওর ওপর। কেউ কিছু জানতে পারবে না কখনো। আমাকে ছুঁয়ে কথা দাও।” চন্দ্রিমা এতোক্ষণ ঋষিকে অনেক কথা বলছিল। পুরনো দিনের কথা বলতে বলতে কখন যে সন্ধে হয়ে গেছে বুঝতে পারেনি। মোবাইলটা হঠাৎ বেজে উঠল। মেয়ের ফোন। “হ্যালো মা, আজ তো বাপির মৃত্যুবার্ষিকী। ফুলের মালা নিয়েছি। তুমি কোথায় আছ? বলেছিলে কার সঙ্গে দেখা করতে যাবে। দেখা হলো? ফেরার সময় আমার সঙ্গে ফিরবে?” চন্দ্রিমা বলে, “হ্যাঁ, তোর সঙ্গে ফিরব।” মেয়েকে কফিশপের ঠিকানা জানিয়ে চন্দ্রিমা ঋষিকে বলে, “আমার মেয়ে আসছে। সরকারি চাকরি করে। ওম নিজের মেয়েকে খুব যত্ন করে বড় করেছে। মেয়েটাও ওম-এর মতোই হয়েছে। ভারি মিষ্টি!” সত্যি মিথ্যের অক্ষরগুলো জায়গা বদল করে নিয়েছে এতক্ষণে। ঋষি স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে। মেঘলা আকাশে জ্বলজ্বল করে শুধু একটি তারা। |