সৌমী তোর লেখা ছোটদের বই ‘নানা রঙের গল্প সত্যিই নানারঙের। প্রতিটি গল্পই তার নিজস্ব রঙে ভিন্ন। শুধু শিশুকিশোর নয়, এগল্প সমানভাবে বড়দেরও মনোরঞ্জন করে। গল্পগুলির হাত ধরে সেই মধুর স্মৃতিময় শৈশবে পৌঁছে যাওয়া যায়।

‘রূপকথার ভন্টাই’ পড়ে মনে হল, এমন নিপুণভাবে শিশুদের মনে যদি স্বপ্ন আর ভালোবাসার বীজ বপন করা যায় তা একদিন বৃক্ষ হয়ে অন্যের আশ্রয়দাতা হয়ে উঠবেই।
“টিকু আর কনিষ্ক” যেন কল্পজগতের জল্পনার মধ্য দিয়ে আসলে ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা ঘোষণা করে গেল।
‘ভাইফোঁটা’ গল্পে চিরন্তন বন্ধনের গল্প। এগল্পের শেষটাও অনবদ্য।
আবার শুধুই প্রকৃতি ও পরিবেশ নয় জীবজগৎ, প্রাণীজগৎ সকলকেই ভালবাসতে শেখায় ‘পুটুং’।
‘চিকমিক বোতাম’ নামটাই খুব অভিনব, এই গল্পের পরিধি ও বিস্তার লীলা মজুমদারের ছোটদের গল্পের কথা মনে করায়।
‘পুপুলের আপনজন’ এক বৃহত্তর পরিবারের কথা বলে। যা আজ আমরা ভুলতে বসেছি।
এক অদ্ভুত সুন্দর গল্প ‘মিসিং লিঙ্ক’ – ইতিহাসের মায়াজালে আবদ্ধ এই গল্প আবার গোয়েন্দা গল্পেরও অনুভূতি দেয়। আবার এক রূপকথার মায়াবী রাজ্যে পাড়ি দেওয়া যায়
‘রাজকুমার টিংলিং’ এর হাত ধারে।
‘মেজদাদুর নস্যির ডিবে’ গল্পটি রহস্যময় গা ছমছমে, ফেলা আসা বনেদিয়ানায় পরিপূর্ণ।
‘কলমি আর মেমসাহেব’ ছোট দুটি কিশোরীর আত্মিক প্রীতির, এক সুন্দর সমানুভূতির গল্প যা দুটি দেশের সীমারেখাকে মুছে ফেলে এক সুতোয় গেঁথে ফেলেছে।
প্রতিটি গল্পই এভাবে একটি করে শিক্ষণীয় অনুভূতির-পাঠ দিয়ে গেল। কিন্তু সে পাঠ কোনো আরোপিত নীতিবাক্য নয়, কোনো তাত্ত্বিক জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ নয়, যেন হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করা এক গভীর জীবনবোধ এই বর্তমান অবক্ষয়েরপ্রতিকূলে টিকে থাকা এক জাগ্রত শুভবোধ যা মানুষকে উন্নীত করে, পরিতুষ্টি দান করে। অনেক ভালোবাসা ও ধন্যবাদ তোকে পাঠককে এমন উপহার দেবার জন্য।
Susmita Roy