
ঈশিতা ভাদুড়ীর কয়েকটি কবিতা
জননী আমার নারীকে চিনেছ যোনি আর জরায়ুতে… জরায়ু থেকে জারিত গোলাপ দেখনি তুমি? দেখনি উর্বর জমিতে নন্দন কানন? চেননি নারীকে, সযত্নে রাখে যে ভ্রূণ জঠরে? দুহাতে বেড়া, রাখে প্রহরী, যেন জল ভেঙে ফুল খসে না পড়ে, যেন বৃন্ত ছিঁড়ে না যায় অসময়ে। চিনেছ সে নারী? সে যে জননী আমার। অলজ্জিত ছলছুতো তরুণী আঁচল উড়িয়ে ডেকেছিল, তাই, স্টেপগুলো বিচ্যুত হয়েছে ওদের। ওরা তো পুরুষ, চলকাতে পারে। আসলে তো মেয়েটারই দোষ ছিল। কিশোরীর গায়ের ছোট স্কার্ট উসকেছে, তাই তো ইন্দ্রিয় উঠেছে জেগে ওদের। এই অবধি অলজ্জিত ছলছুতো বেশ ছিল, অশ্লীল দোষারোপ। এবার বলো, শিশুটির কোন অংশ দিল তোমাদের হাতছানি? কীভাবে এল জিভে লালা? তোমরা কী পুরুষ আদপে? নাকি ইতর খাদক এক একটি? অজগরের চেয়েও ভয়ানক? কতগুলো লিঙ্গ ছিঁড়ে নিলে কতগুলো লিঙ্গ, কতগুলি জিহবা ছিঁড়ে নিলে মানুষ শব্দের জন্ম পুনরায়? কতগুলো কামাতুর চোখ, কতগুলি কালো নখ উপড়ে নিলে বর্বর শব্দের বিলোপ? কতগুলি লোভী শরীর, কতখানি অন্ধকার মাটিচাপা দিলে ধর্ষণ শব্দটি নেবে অন্তিম শয্যা? আর, অনন্ত আকাশে ফুটে উঠবে রঙের বাহার? শিশু থেকে বৃদ্ধা বেজে উঠবে অনন্ত সুরের মূর্ছনায়? কতসহস্র ছিঃ এর পর জন্ম তবে দেবীপক্ষের? হে পুরুষ (ইরানে মাসা আমিনিকে হত্যার প্রতিবাদে) মস্তক অনাবৃত হলে নগ্নতা মানো তোমরা? আসলে নারীকে সম্পূর্ণ ঢেকে তোমরা নিজেদেরকেই মুড়ে দিচ্ছ অন্ধকারে, হে পুরুষ। আমার পায়ের বুট যদি তোমার কাম জাগায়, হে পুরুষ, তোমার চক্ষু রাখো বেঁধে কালো বস্ত্রে। আমার ওপর বিধিমালা আসলে যে তোমাকেই করে আব্রু। তোমরা যত করবে নিষেধ, আমরা ততই নামাবো পিঠে চুলের ঢল। আমরা হাঁটবো অন্তস্রোতে, তোমরা কত নামবে খাদে? কত মাসা আমিনিকে নেবে তোমরা? কত হবে উদ্ধত তোমাদের তর্জনী? |
প্রতিটি কবিতাই বাস্তবের প্রকাশ। তার মধ্যেও ‘কতগুলো লিঙ্গ ছিঁড়ে নিলে’ ‘হে পুরুষ ‘ দুর্দান্ত লাগল।
ধন্যবাদ পিয়াংকী
খুব সুন্দর
কি অপূর্ব লিখনি…
অসাধারন।
I really love your blog..