অর্পিতা ঘোষ পালিত

উত্তরণ

অর্পিতা ঘোষ পালিত

বুদ্ধি হয়ে থেকে পেনি দেখছে ওর ঠাকমা ছাড়া আর কেউ নেই। ও ছোটো থাকতেই ওর বাবা বাইরে কাজে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। তারপর ওর মা ও ওকে ফেলে কার সাথে যেন চলে গেছে। রাস্তার ধারে ফুটপাতের ওপরে ছেঁড়া পলিথিনের নিচে ঠাকমার ঘর সংসার। ঠাকমা সকাল হলেই রাস্তার পাশে এক কোণে একটা ভাঙা থালা নিয়ে ভিক্ষা করতে বসে।  পথ চলতি মানুষ জন যাতায়াতের পথে থালার ওপর দু এক টাকা ফেলে দিয়ে যায়, অনেক সময় কেউ দয়া করে কিছু খাবার দেয়। এভাবেই পেনি আর ওর ঠাকমার যা হোক করে চলে যায়। কিন্তু বর্ষাকালে খুব কষ্ট হয়। এক নাগাড়ে কদিন বৃষ্টি পড়লে ওদের দুজনকে একপ্রকার না খেয়েই থাকতে হয়। কেননা বৃষ্টির মধ্যে ভিক্ষার জন্য বসতে পারে না। এ-দোকান সে-দোকান থেকে চেয়ে চিন্তে কিছু পেলে  দুজনে ভাগ করে খায়। তার মধ্যে আবার পলিথিনের ভেতরে বৃষ্টির জলে সব ভিজে যায়। কাছের হাসপাতালে যে ছাদ দেওয়া চাতালটা আছে রোগির পরিবারের জন্য, সেখানে ঠাকমা আর ও গিয়ে বসে। 
      পেনি ছোট থেকে দেখে আসছে শীতকাল এলে পথ চলতি বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে যেন আনন্দের ঢল নামে, বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে, সবাই সেজে-গুজে বেড়াতে বেড়োয়। কাছাকাছি কয়েকটা পার্ক আছে মনে হয় সবাই সেখানে যায়। ওর বয়সী ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা কী সুন্দর আনন্দ করতে করতে বাবা মায়ের হাত ধরে হেঁটে যায়। ও শুধু ওদের দিকে জুলজুল করে তাকিয়ে থাকে। 
 
       এসব দেখতে দেখতেই  পেনি বড় হয়ে গেল। কিছুদিন হলো ফুটপাত সারানো হচ্ছে বলে পেনি আর ওর ঠাকমাকে ঘর থেকে উঠিয়ে দিয়েছে। ওদের মাথার ওপরে যাও বা একটু ছেড়া পলিথিন ছিল সেটাও নেই।  অবশ্য ফুটপাত সারানো হলে  আগে ওরা যেখানে ছিল সেখানেই আবার থাকতে পারবে।  এখন পেনি আর ওর ঠাকমার সংসার তাই রাস্তার  মাঝখানে, সারাদিন রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নিচে ওরা দুজন শুয়ে বসে থাকে। ওদের পাশ দিয়ে সাঁই সাঁই করে সব গাড়ি চলে যায়, কেউ ওদের দিকে ফিরেও তাকায় না। 
      দুদিন ধরে পেনিরা সেরকম ভিক্ষা পায়নি, তাই ভাত খাওয়া হয়নি। যত গাড়ি যাচ্ছে পেনি গাড়িগুলোর দিকে হাত বাড়িয়ে ভিক্ষা চাইছে, কিন্তু কোনো গাড়ি ভ্রুক্ষেপ করছে না।
       পাশেই  একটা প্রাইভেট কোম্পানির অফিস  বিল্ডিং। সেখানে গেটের পাশে একজন সিকিউরিটি ছেলে সারাদিন  একটা চেয়ারে বসে থাকে। বসে বসে  ছেলেটা পেনি আর ওর ঠাকমাকে রোজ দেখে।  ছেলেটা লক্ষ করেছে যে পেনিরা দুদিন ভাত খায়নি।  সেদিন ছেলেটা পাশের একটা হোটেল থেকে মাংস ভাত কিনলো। দুহাতে প্লেটদুটো নিয়ে পেনি আর ওর ঠাকমার কাছে গিয়ে ভাতের প্লেট দুটো ওদের দুজনের হাতে দিলো। 
    পেনির ঠাকমা ছেলেটার ব্যবহার দেখে অভিভূত। ছেলেটাকে বলল— বাবা তোমাকে আমি চিনি। আমি ভিখারি আর অশিক্ষিত  হলেও জানি তুমি সামনের ওই অফিসে সামান্য টাকার চাকরি করো। বাবা তোমার তো নিজের সংসার আছে, তা সত্ত্বেও তুমি আমাদের দুজনের জন্য এত পয়সা দিয়ে মাংস ভাত এনে দিলে। আমরা যে দুদিন ভাত খাইনি তা তুমি লক্ষ করেছ বুঝতে পারছি।  তাই দেখে তুমি স্থির থাকতে পারনি, তোমার ভেতরের মনুষ্যত্ব জেগে উঠেছে। আজ তুমি দুদিনের দুজন অভুক্ত মানুষকে খেতে দিলে। আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি ভগবান যেন তোমাকে খুব ভালো রাখেন। তোমার সব ইচ্ছা তিনি পূরণ করেন। 
—আর কথা না বলে এবার তোমরা খেয়ে নেও। আমি আসছি…
   
    এরপর থেকে মাঝে মাঝে এটা সেটা খাবার কিনে ছেলেটা পেনি আর ওর ঠাকমাকে দিত। পেনির ঠাকমা একদিন ছেলেটাকে ওর নাম জিজ্ঞাসা করল।
ছেলেটা বলল ওর  নাম বিকাশ। 
ঠাকমা—  তোমার বাড়ি কোথায়, সেখানে আর কে কে আছে?
বিকাশ—  বাড়িতে শুধু মা আছে, আর কেউ নেই। আমি যখন ক্লাস টেন-এ পড়ি তখন বাবা মারা যাই। আমরা গরিব, পয়সার অভাবে আর পড়াশোনা হয়নি। কাজের চেষ্টায় ঘুরতে ঘুরতে এই অফিসে সিকিউরিটির চাকরিটা পেয়ে যায়। এখান থেকে দুঘন্টার পথ আমার বাড়ি, মা ভাত রান্না করে দেয়, সকালে ভাত খেয়ে ট্রেনে করে অফিসে আসি, দুপুরের জন্য  মা টিফিন কৌটোতে খাবার দিয়ে দেয়। অফিস ছুটি হবার পরে আবার ট্রেনে করে বাড়ি ফিরি।
 
    কদিন পরে  ঠাকমা বিকাশের কাছে গেল। বিকাশ— কিছু বলবে ঠাকমা? 
—তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।
—বলো ঠাকমা, তোমার সব কথা আমাকে নির্ভয়ে বলতে পারো।
—তোমাদের তো অনেক বড় অফিস, ঝাঁট দিয়ে ঘর মুছে পরিষ্কার করতে তো লোক লাগে। তুমি তো এই অফিসে কাজ করো, তোমার সাহেবকে একটু বলে দেখ না আমার নাতনি পেনিকে ঝাঁট দেওয়ার কাজে নেবে কিনা। আমার বয়স হয়েছে, হয়তো কোনোদিন মরে যাবো। পেনিটা যদি কোনো কাজ পায় তাহলে শান্তিতে মরতে পারবো।
—ঠিক আছে ঠাকমা, আমি সাহেবের সাথে কথা বলবো। তবে আমাদের অফিসে ঘর পরিষ্কার করার জন্য রমেশ কাকা আছে, তবুও সাহেবকে বলে দেখবো, যদি কোনো কাজ পেনিকে দেয়।
      পরের দিন বিকাশ সাহেবকে পেনির কথা বলল। সাহেব পেনিকে চেনেন, যাতায়াতের পথে দেখেছেন।
 সাহেব  –  আমাদের এতো বড় অফিসে একজন মাত্র কাজ করে। রমেশের  বয়স হয়েছে,  ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, আমিও কদিন থেকে ভাবছিলাম আর একজন সুইপার রাখবো। মেয়েটা ঠিকমতো কাজ করতে পারবে তো? কাল তুমি মেয়েটাকে একবার আসতে বলো, আমি কথা বলে দেখবো।
বিকাশ –  ঠিক আছে স্যার, আমি আজ ছুটির পর ওদের বলে দেব।
      অফিস ছুটি হলে বাড়ি ফেরার সময় বিকাশ ঠাকমার সাথে দেখা করল, সাহেব যা বলেছে সে কথাগুলো বলল। ঠাকমার আনন্দে চোখে জল এসে গেল, বলল… আমাদের দুজনের কাছে তুমি ভগবানের দূত হয়ে এসেছো, এই বুড়ি বয়সে তোমার দৌলতে মনে হচ্ছে একটু সুখের মুখ দেখবো।
—কী যে বলো ঠাকমা, তুমি সাহেবকে জিজ্ঞাসা করতে বলেছিলে বলেই তো আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম। আমাদের অফিসে কাজ করে রমেশ কাকা, ওনার একটু বয়স হয়ে গেছে বলে উনি সব ঘর ঠিকমতো ঝাড়পোঁছ করতে পারেন না, সেজন্য সাহেব আরও রাজি হয়েছেন।
     
     পরদিন সকালে অফিসে ঢোকার আগে একটা প্যাকেট পেনির হাতে দিয়ে বিকাশ বলল— এটা  পরে অফিসে এসো। আমি সাহেবের ঘর দেখিয়ে দেবো, তুমি গিয়ে সাহেবের সাথে কথা বলবে।
      পেনির চোখ দুটো জ্বলজ্বল করে উঠল, ও জীবনে এই প্রথম নতুন পোশাক পরবে। এতদিন সবার কাছে চেয়ে চিন্তে পুরোনো জামাকাপড় পড়েছে। ওর ঠাকমার ও খুব আনন্দ, বিকাশের জন্য ঠাকুরের কাছে শুধু বলতে লাগল— ছেলেটাকে ভালো রেখো ঠাকুর।
     
     অফিসে পেনির কাজটা হয়ে গেল। রোজ সকালে পেনি অফিসে ঢুকে  মন দিয়ে ঘরগুলোকে ঝেড়ে মুছে সাফসুতরো করে দেয়, ও টেবিল চেয়ার মুছে ঝকঝকে করে রাখে।
    দেখতে দেখতে একমাস হয়ে গেল পেনির কাজ। প্রথম মাসের মাইনে পেয়ে এক প্যাকেট মিষ্টি কিনে ঠাকমাকে সাথে নিয়ে বিকাশের কাছে গেল। পেনি বিকাশকে মিষ্টির প্যাকেটটা দিয়ে বলল— এই মিষ্টিগুলো আপনি খাবেন, এটা আমার নিজের উপার্জন করা পয়সা দিয়ে কেনা।  আপনি খেলে আমি আর  ঠাকমা  খুব আনন্দ পাবো।   
 বিকাশ মিষ্টির প্যাকেটটা হাতে নিয়ে খুলে ঠাকমাকে একটা দিয়ে বলল— ঠাকমা তুমি আগে খাও তারপরে আমি খাবো।
 ঠাকমা মিষ্টিটা হাতে নিয়ে বিকাশের মুখের কাছে নিয়ে গেল… আগে তুমি খাও, তারপর আমরা খাবো।
 বিকাশ হাঁ করলো।  ঠাকমা প্যাকেট থেকে মিষ্টি নিয়ে পেনিকে একটা খাইয়ে দিলো ও নিজে একটা খেলো।
 
      সময় এগিয়ে চলে,  পেনি নিজেদের ছেড়া পলিথিন বদলে ভালো পলিথিন কিনে লাগিয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে পেনির ঠাকমার অসুখ, হাসপাতালের আউটডোরে দেখিয়ে ওষুধ খাচ্ছে, তাও সারছে না।  সেদিন রাতে অসুখটা খুব বাড়াবাড়ি হলো। পেনি ঠাকমাকে নিয়ে পাশের হাসপাতালে গেল। ওরা ঠাকমাকে ভর্তি করে নিলো।
      পরের দিন বিকাশ অফিসে আসার পরে পেনি গিয়ে বিকাশকে ঠাকমার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা বলল। রুগি দেখার নির্দিষ্ট সময়ে  বিকাশ ঠাকমাকে দেখতে গেল। ঠাকমা চোখ বন্ধ করে, অচৈতন্য অবস্থায় শুয়ে। ঠাকমার এ অবস্থা দেখে পেনি কান্নাকাটি করছে। বিকাশ অনেক বোঝালো পেনিকে।
      রাতে পেনি ওদের পলিথিনের ঘরে একাই শুয়েছে, অন্যদিন ঠাকমা থাকে।  একটু ভয় করছে, ঘুম আসছে না। চারিদিক ভালো করে বেঁধেছে কিনা আর একবার উঠে দেখলো। না, ঠিক আছে, কিন্তু কেউ যদি ঢুকতে চায় তাহলে অনায়াসে ঢুকতে পারবে। পেনি শুয়ে থাকতে থাকতে কখন ঘুমিয়ে গেছে। হঠাৎ একটা আওয়াজে  ঘুম ভেঙে গেল। চমকিয়ে দেখলো ঘরের ভেতরে অন্য একজন কেউ ঢুকেছে।  পেনি ধড়ফড় করে উঠে বসলো, ওর বুজতে অসুবিধা হোল না যে ঢুকেছে সে কী উদ্দেশ্য নিয়ে ঢুকেছে। লোকটাকে ধাক্কা দিয়ে পলিথিনের দরজা সরিয়ে হাসপাতালের দিকে দৌড়ালো। পেছন পেছন লোকটাও দৌড়ে  আসছে,  প্রাণপণ দৌড়ে হাসপাতালের গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেল। লোকটা হাসপাতালের গেটে থমকে দাঁড়াল। পেনি ঢাকা বারান্দায় গিয়ে হাফ নিলো, সেখানে অনেক লোক শুয়ে আছে, আর কোনো ভয় নেই।  গেটের দিকে তাকিয়ে পেনি দেখল হোটেলে কাজ করা ছেলেটা ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে ওখান থেকে চলে গেল। পেনি ধপ করে বসে পড়ল, দুহাতে মুখ ঢেকে হু হু করে কেঁদে উঠল।
     পরেরদিন সকাল হতেই  পেনি ঘরে গেল। ও জানে দিনেরবেলায় কোনো ভয় নেই,  রাস্তা দিয়ে অনেক লোক যাতায়ত করে। হাত মুখ ধুয়ে  পরিষ্কার হয়ে অফিসে গেল। সেখানে ঘরগুলো ঝাড়পোঁছ  করল। ঘরে ফিরে আসার সময় দেখল বিকাশ ঢুকছে। পেনি বিকাশের কাছে গেল…  কাল রাতে আমার সর্বনাশ হতে যাচ্ছিল, মাঝরাতে হোটেলে কাজ করে ছেলেটা আমার ঘরে ঢুকেছিল, ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে হাসপাতালে গিয়ে বসেছিলাম। 
বিকাশ শুনে ভীষণ রেগে গেল— এত বড় সাহস, চলতো দেখি, ওকে আজ শায়েস্তা না করলে হবে না।
—কী হবে গিয়ে? কাল রাতে ও ঢুকেছে আজ অন্য কেউ ঢুকবে। এখন  ঠাকমা হাসপাতালে ভর্তি দেখে সব পশুগুলো এ-সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে না। আমি ঠিক করেছি ঠাকমা যতদিন ভালো না হয় ততদিন আমি হাসপাতালের চাতালে শোব,  ওখানে  অনেক রুগির বাড়ির লোকজন শুয়ে থাকে। ওখানে নিরাপদে থাকতে পারবো। এখন ঘরে যাচ্ছি, একটু পরে ঠাকমাকে দেখতে যাবো।
     বিকাশ ওর চেয়ারটায় বসে আছে, দেখে পেনি হাসপাতালের দিক থেকে জোরে হেঁটে আসছে। ও ভাবলো… পেনির আবার কী হলো, ওতো জোরে হাঁটছে কেন? 
পেনি বিকাশের কাছে এসে হাউ হাউ  কেঁদে ফেললো—  ঠাকমা আর নেই,  আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আমার আর কেউ থাকলো না, সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যায়। আমি একা একা এখন কী করবো?
—কী বলছো ঠাকমা নেই? একটু দাঁড়াও স্যারকে বলে আসছি… অফিসের ভেতরে গেল। কিছুক্ষণ পরে ফিরে এলো… চলো। 
দুজনে হাসপাতালে গেল। প্রথমে ঠাকমাকে দেখলো, তারপর কাগজপত্রে সই করে পেনিকে বলল— আমি এখুনি আসছি, তুমি ঠাকমার পাশে  বসো। 
   একটা টেম্পো ভাড়া করলো বিকাশ, অফিসের রমেশ কাকা ও আরও দুজনকে  নিয়ে হাসপাতালে এলো। পেনি খুব কাঁদছে আর বলছে— আমার এবার কী হবে, আমি একা কি করে থাকবো।
 বিকাশ— ঠাকমাকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার আগে একটা বড় কাজ আছে। এই বলে ওর পকেটের ভেতর থেকে একটা সিঁদুরের কৌটো বের করলো (যেটা ও একটু আগে কিনেছে)… ঠাকমাকে সাক্ষী রেখে সবার সামনে আজ আমি তোমায় সিঁদুর পরিয়ে দেব। তারপর ঠাকমাকে প্রণাম করে আমরা দুজনে  আশীর্বাদ নেবো।
পেনি— পথের ভিখারিকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে লজ্জা লাগবে না, লোকে কী বলবে?
—কেউ ভিখারি হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। এ দুনিয়ায় কেউ বড়লোক, কেউ গরিব আবার কেউ বা ভিখারি। কিন্তু আমরা সবাই মানুষ, মানুষের মনুষত্বই যদি না থাকলো তবে মানুষ হয়ে জন্ম গ্রহণ করে লাভ কী? তারপর পেনির মাথায় সিঁদুর পরিয়ে  দিলো।
 দুজনে ঠাকমাকে প্রণাম করল।
—আজ থেকে তুমি আমার স্ত্রী, এখন থেকে তুমি আমার বাড়িতে আমার সাথেই থাকবে।
—ঠাকমা তোমাকে ঠিকই চিনেছিল, মাঝে মাঝে বলত— বিকাশ মানুষ না, ভগবান। ওর মধ্যে দিয়েই ভগবান আমাদের কাছে এসেছে…  নিচু হয়ে বিকাশকে প্রণাম করল পেনি। 
বিকাশ পেনিকে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল— তোমার স্থান পায়ে না, আমার বুকে তোমার জায়গা।

Leave a Reply